Theatre: নিয়মই শেষ কথা? জীবন তুচ্ছ ! প্রশ্ন তুলবে সোহাগ সেনের নাটক ‘ধ্বস’!
24 November 2024
Ensemble, Kolkata
বিনোদন

Theatre: নিয়মই শেষ কথা? জীবন তুচ্ছ ! প্রশ্ন তুলবে সোহাগ সেনের নাটক ‘ধ্বস’!

Reporter: নিজস্ব সংবাদদাতা | লেখক: অঙ্গনা ঘোষ ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১৫ : ৪৬

নিজস্ব সংবাদদাতা: রবিবারের সন্ধেয় একাডেমি প্রাঙ্গন তখন কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আর কিছুক্ষণেই শুরু হবে সোহাগ সেনের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় নাটক “ধ্বস”! মঞ্চসজ্জা হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ততক্ষণে আবহ তৈরি করছেন বাচিকশিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। স্পটলাইট তাঁর ওপরেই। চারপাশে নিস্তব্ধতা। শিল্পী একমনে পাঠ করছেন কবি ফরুগ ফারখজাদের কবিতা – “”কাম ব্যাক টু মী… আই হ্যাভ নো ওয়ার্ডস!”” শেষ হতেই সরে এল যবনিকা। শুরু হবে “ধ্বস”! প্রথমেই এক অন্তঃস্বত্বা নারীর প্রবেশ। সাবধানে পা ফেলছে সে। যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠলেও আওয়াজ করা যাবে না। তাহলেই নামবে “ধ্বস”!


তুরস্কের একটি মূল নাটক “দি অ্যাভালাঞ্চ” থেকেই “ধ্বস” অনুবাদ করেছেন সোহাগ সেন ও কৌশিক বসু। অভিনয়ে আছেন অসিত বসু, সোহাগ সেন, কৌশিক বসু, কজ্জ্বল ঘোষ, সুতপা ঘোষ, সোমা মুখোপাধ্যায়, রাজীব মুখোপাধ্যায়, রঞ্জন বিশ্বাস, তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনয়ন খোটেল, মধুঋতু দাশগুপ্ত, ঋসব পান্ডে ও সায়ন্তন মন্ডল।  গল্প অনুযায়ী পাহাড় ঘেরা ছোট্ট গ্রামের ন”মাস কাটে ধ্বসের আতঙ্কে। নৈঃশব্দই তাদের বেঁচে থাকার মূলমন্ত্র। তারা কথা বলে ফিসফিসিয়ে, জোরে আওয়াজ করে না। সেখানে নবজাতকের জন্মের সময়টিও রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণাধীন।  সেখানেই প্রশ্ন তোলে “ধ্বস” – নিয়ম বড় নাকি জীবন? এরপর যেদিন ভয় কেটে গেল, জীবনের জন্য যখন একটা কন্ঠ প্রতিবাদ করল, জানা গেল ধ্বসের আড়ালে ভয় ছাড়া আর কিছুই নেই । বস্তুত সোহাগ সেনের “ধ্বস” একটি দর্পণ, যেখানে রাষ্ট্রীয় শোষণের ছবিটা ভেসে ওঠে স্পষ্ট ভাবে।
নাটকটি শেষ হতেই করতালির প্রতিধ্বনি। প্রথম সারিতেই বসেছিলেন অভিনেত্রী, পরিচালক, অপর্না সেন। আজকাল ডট ইন এর প্রশ্নে জানালেন, “যে পরিস্থিতিতে এখন বাস করছি তাতে সবসময় ভয়ে ভয়ে থাকতে হচ্ছে। কখন কী বললে তার কী পরিণাম  হবে আমরা জানি না। শুধু এখানে নয়, সারা পৃথিবীতেই একই অবস্থা। এটা চিরকালই ছিল। আর সোহাগদির পরিচালনা নিয়ে তো নতুন করে কিছু বলার নেই। অসাধারণ! এই নিয়ে দু”বার দেখলাম নাটকটা।”

ভাইঝির অভিনয় দেখতে রবিবাসরীয় সন্ধেয় একাডেমিতে হাজির ছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। আজকাল ডট ইনকে জানালেন, “ভয় তো আছেই চারপাশে। তবে সেই ভয়কে জয় করার মধ্যেই আনন্দ বেশি।” অভিনেত্রীর মতে, “বিনোদন দুনিয়ায় সব থেকে বড় ভয় হল টিকে থাকা।” কথায় কথায় বললেন, “আমার দাদার মেয়ে মধুঋতু এই নাটকে অভিনয় করেছে। দেখার সুযোগ হচ্ছিল না। আজ কলকাতায় ছিলাম তাই মনস্থির করেছিলাম ২ ঘন্টা সময় বের করবই। অভিনয়ে নতুন হলেও ভাল কাজ করছে ভাইজি।””
বাচিকশিল্পী সুজয়প্রসাদের কথায়, “আমি নির্ভীক প্রজাতির। লোকজন আমায় ভয় পায়। আমি ভয় পাই না কারণ আমি সরকারের ভাতার ওপর নির্ভরশীল নই। কিন্তু যাঁরা নির্ভর করেন, তাঁরা? এই যে এত বড় নাট্যোৎসব হচ্ছে যেখানে অনসম্বল ডাক পেল না, কোনও কারণ আছে? এগুলো আমাকে ভাবায়।””
সবশেষে গ্রিনরুমে অনুরাগীদের ভিড়ে পাওয়া গেল “অনসম্বল”র এর কাণ্ডারী সোহাগ সেনকে। তিনি জানালেন, “”নাটকটিতে খুব সহজভাবে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলা হয়েছে। রাষ্ট্রের নিয়ম আমাদের ড্রইং রুম, রান্নাঘর, ঠাকুরঘরে তো ছিলই, বেডরুমেও ঢুকে পড়ছে। সেটা খুবই অদ্ভুত একটা বিষয়। ভাবনারও। ভয় কাটিয়ে, প্রতিবাদের কথা বলে “ধ্বস”!””

Important Notifications